সূরা ইয়াসিন বাংলা উচ্চারণ সহ

সূরা ইয়াসিন বাংলা উচ্চারণ সহ PDF Free Download, Surah Yaseen with Bengali pronunciation pdf free download, Al-Quran Bangla PDF Version.

সূরা ইয়াসিন বাংলা উচ্চারণ সহ PDF

[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নামে ]

بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ

আরবি উচ্চারণ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

বাংলা অনুবাদ
পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

يس1

বাংলা অনুবাদ
১ ইয়া-সীন।

وَالْقُرْآنِ الْحَكِيمِ2

বাংলা অনুবাদ
২ বিজ্ঞানময় কুরআনের শপথ।

إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ3

বাংলা অনুবাদ
৩ নিশ্চয় তুমি রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত।

عَلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ4

বাংলা অনুবাদ
৪ সরল পথের উপর প্রতিষ্ঠিত।

تَنْزِيلَ الْعَزِيزِ الرَّحِيمِ5

বাংলা অনুবাদ
৫ (এ কুরআন) মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়াময় (আল্লাহ) কর্তৃক নাযিলকৃত।

لِتُنْذِرَ قَوْمًا مَا أُنْذِرَ آبَاؤُهُمْ فَهُمْ غَافِلُونَ6

বাংলা অনুবাদ
৬ যাতে তুমি এমন এক কওমকে সতর্ক কর, যাদের পিতৃপুরুষদেরকে সতর্ক করা হয়নি, কাজেই তারা উদাসীন।

لَقَدْ حَقَّ الْقَوْلُ عَلَى أَكْثَرِهِمْ فَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ7

বাংলা অনুবাদ
৭ অবশ্যই তাদের অধিকাংশের উপর (আল্লাহর) বাণী অবধারিত হয়েছে, ফলে তারা ঈমান আনবে না।

إِنَّا جَعَلْنَا فِي أَعْنَاقِهِمْ أَغْلَالًا فَهِيَ إِلَى الْأَذْقَانِ فَهُمْ مُقْمَحُونَ 8

বাংলা অনুবাদ
৮ নিশ্চয় আমি তাদের গলায় বেড়ি পরিয়ে দিয়েছি এবং তা চিবুক পর্যন্ত। ফলে তারা ঊর্ধ্বমুখী হয়ে আছে।

وَجَعَلْنَا مِنْ بَيْنِ أَيْدِيهِمْ سَدًّا وَمِنْ خَلْفِهِمْ سَدًّا فَأَغْشَيْنَاهُمْ فَهُمْ لَا يُبْصِرُونَ9

বাংলা অনুবাদ
৯ আর আমি তাদের সামনে একটি প্রাচীর ও তাদের পিছনে একটি প্রাচীর স্থাপন করেছি, অতঃপর আমি তাদেরকে ঢেকে দিয়েছি, ফলে তারা দেখতে পায় না।

وَسَوَاءٌ عَلَيْهِمْ أَأَنْذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ تُنْذِرْهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ10

বাংলা অনুবাদ
১০ আর তুমি তাদেরকে সতর্ক কর অথবা না কর তাদের কাছে দু’টোই সমান, তারা ঈমান আনবে না।

إِنَّمَا تُنْذِرُ مَنِ اتَّبَعَ الذِّكْرَ وَخَشِيَ الرَّحْمَنَ بِالْغَيْبِ فَبَشِّرْهُ بِمَغْفِرَةٍ وَأَجْرٍ كَرِيمٍ11

বাংলা অনুবাদ
১১ তুমি তো কেবল তাকেই সতর্ক করবে যে উপদেশ মেনে চলে এবং না দেখেও পরম করুণাময় আল্লাহকে ভয় করে। অতএব তাকে তুমি ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কারের সুসংবাদ দাও।

إِنَّا نَحْنُ نُحْيِي الْمَوْتَى وَنَكْتُبُ مَا قَدَّمُوا وَآثَارَهُمْ وَكُلَّ شَيْءٍ أحْصَيْنَاهُ فِي إِمَامٍ مُبِينٍ12

বাংলা অনুবাদ
১২ আমিই তো মৃতকে জীবিত করি আর লিখে রাখি যা তারা অগ্রে প্রেরণ করে এবং যা পিছনে রেখে যায়। আর প্রতিটি বস্তুকেই আমি সুস্পষ্ট কিতাবে সংরক্ষণ করে রেখেছি।

وَاضْرِبْ لَهُمْ مَثَلًا أَصْحَابَ الْقَرْيَةِ إِذْ جَاءَهَا الْمُرْسَلُونَ 13

বাংলা অনুবাদ
১৩ আর এক জনপদের অধিবাসীদের উপমা তাদের কাছে বর্ণনা কর, যখন তাদের কাছে রাসূলগণ এসেছিল।

إِذْ أَرْسَلْنَا إِلَيْهِمُ اثْنَيْنِ فَكَذَّبُوهُمَا فَعَزَّزْنَا بِثَالِثٍ فَقَالُوا إِنَّا إِلَيْكُمْ مُرْسَلُونَ14

বাংলা অনুবাদ
১৪ যখন আমি তাদের কাছে দু’জন রাসূল পাঠিয়েছিলাম, তখন তারা তাদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল। তারপর আমি তাদেরকে তৃতীয় একজনের মাধ্যমে শক্তিশালী করেছিলাম। অতঃপর তারা বলেছিল, ‘নিশ্চয় আমরা তোমাদের প্রতি প্রেরিত রাসূল’।

قَالُوا مَا أَنْتُمْ إِلَّا بَشَرٌ مِثْلُنَا وَمَا أَنْزَلَ الرَّحْمَنُ مِنْ شَيْءٍ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا تَكْذِبُونَ15

বাংলা অনুবাদ
১৫ তারা বলল, ‘তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ। আর পরম করুণাময় তো কিছুই নাযিল করেননি। তোমরা শুধু মিথ্যাই বলছ।

قَالُوا رَبُّنَا يَعْلَمُ إِنَّا إِلَيْكُمْ لَمُرْسَلُونَ16

বাংলা অনুবাদ
১৬ তারা বলল, ‘আমাদের রব জানেন, অবশ্যই আমরা তোমাদের কাছে প্রেরিত রাসূল’।

وَمَا عَلَيْنَا إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ17

বাংলা অনুবাদ
১৭ ‘আর সুস্পষ্টভাবে পৌঁছিয়ে দেয়াই আমাদের দায়িত্ব’।

قَالُوا إِنَّا تَطَيَّرْنَا بِكُمْ لَئِنْ لَمْ تَنْتَهُوا لَنَرْجُمَنَّكُمْ وَلَيَمَسَّنَّكُمْ مِنَّا عَذَابٌ أَلِيمٌ18

বাংলা অনুবাদ
১৮ তারা বলল, ‘আমরা তো তোমাদেরকে অমঙ্গলের কারণ মনে করি। তোমরা যদি বিরত না হও তাহলে আমরা অবশ্যই তোমাদেরকে পাথর মেরে হত্যা করব এবং আমাদের পক্ষ থেকে তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক আযাব স্পর্শ করবে’।

قَالُوا طَائِرُكُمْ مَعَكُمْ أَئِنْ ذُكِّرْتُمْ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ مُسْرِفُونَ 19

বাংলা অনুবাদ
১৯ তারা বলল, তোমাদের অমঙ্গলের কারণ তোমাদের সাথেই। তোমাদেরকে উপদেশ দেয়া হয়েছে বলেই কি এরূপ বলছ? বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী কওম’।

وَجَاءَ مِنْ أَقْصَى الْمَدِينَةِ رَجُلٌ يَسْعَى قَالَ يَا قَوْمِ اتَّبِعُوا الْمُرْسَلِينَ20

বাংলা অনুবাদ
২০ আর শহরের দূরপ্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি দৌড়ে এসে বলল, ‘হে আমার কওম! তোমরা রাসূলদের অনুসরণ কর।

اتَّبِعُوا مَنْ لَا يَسْأَلُكُمْ أَجْرًا وَهُمْ مُهْتَدُونَ21

বাংলা অনুবাদ
২১ ‘তোমরা তাদের অনুসরণ কর যারা তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চায় না আর তারা সৎপথপ্রাপ্ত’।

وَمَا لِيَ لَا أَعْبُدُ الَّذِي فَطَرَنِي وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ22

বাংলা অনুবাদ
২২ ‘আর আমি কেন তাঁর ইবাদাত করব না যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন? আর তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে’।

أَأَتَّخِذُ مِنْ دُونِهِ آلِهَةً إِنْ يُرِدْنِ الرَّحْمَنُ بِضُرٍّ لَا تُغْنِ عَنِّي شَفَاعَتُهُمْ شَيْئًا وَلَا يُنْقِذُونِ23

বাংলা অনুবাদ
২৩ আমি কি তাঁর পরিবর্তে অন্য ইলাহ গ্রহণ করব? যদি পরম করুণাময় আমার কোন ক্ষতি করার ইচ্ছা করেন, তাহলে তাদের সুপারিশ আমার কোন কাজে আসবে না এবং তারা আমাকে উদ্ধারও করতে পারবে না’।

إِنِّي إِذًا لَفِي ضَلَالٍ مُبِينٍ24

বাংলা অনুবাদ
২৪ ‘এরূপ করলে নিশ্চয় আমি স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পতিত হব’।

إِنِّي آمَنْتُ بِرَبِّكُمْ فَاسْمَعُونِ25

বাংলা অনুবাদ
২৫ ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের রবের প্রতি ঈমান এনেছি, অতএব তোমরা আমার কথা শোন’।

قِيلَ ادْخُلِ الْجَنَّةَ قَالَ يَا لَيْتَ قَوْمِي يَعْلَمُونَ 26

বাংলা অনুবাদ
২৬ তাকে বলা হল, ‘জান্নাতে প্রবেশ কর’। সে বলল, ‘হায়! আমার কওম যদি জানতে পারত’,

بِمَا غَفَرَ لِي رَبِّي وَجَعَلَنِي مِنَ الْمُكْرَمِينَ27

বাংলা অনুবাদ
২৭ ‘আমার রব আমাকে কিসের বিনিময়ে ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং আমাকে সম্মানিতদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন’।

وَمَا أَنْزَلْنَا عَلَى قَوْمِهِ مِنْ بَعْدِهِ مِنْ جُنْدٍ مِنَ السَّمَاءِ وَمَا كُنَّا مُنْزِلِينَ28

বাংলা অনুবাদ
২৮ আর আমি তার (মৃত্যুর) পর তার কওমের বিরুদ্ধে আসমান থেকে কোন সৈন্য পাঠাইনি। আর তা পাঠানোর কোন দরকারও আমার ছিল না।

إِنْ كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً فَإِذَا هُمْ خَامِدُونَ29

বাংলা অনুবাদ
২৯ তা ছিল শুধুই একটি বিকট আওয়াজ, ফলে তারা নিথর-নিস্তব্ধ হয়ে পড়ল।

يَا حَسْرَةً عَلَى الْعِبَادِ مَا يَأْتِيهِمْ مِنْ رَسُولٍ إِلَّا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ30

বাংলা অনুবাদ
৩০ আফসোস, বান্দাদের জন্য! যখনই তাদের কাছে কোন রাসূল এসেছে তখনই তারা তাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করেছে।

أَلَمْ يَرَوْا كَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُمْ مِنَ الْقُرُونِ أَنَّهُمْ إِلَيْهِمْ لَا يَرْجِعُونَ31

বাংলা অনুবাদ
৩১ তারা কি লক্ষ্য করেনি যে, আমি তাদের পূর্বে কত প্রজন্মকে ধ্বংস করেছি, নিশ্চয় যাঁরা তাদের কাছে ফিরে আসবে না।

وَإِنْ كُلٌّ لَمَّا جَمِيعٌ لَدَيْنَا مُحْضَرُونَ 32

বাংলা অনুবাদ
৩২ আর তাদের সকলকে একত্রে আমার কাছে হাযির করা হবে।

وَآيَةٌ لَهُمُ الْأَرْضُ الْمَيْتَةُ أَحْيَيْنَاهَا وَأَخْرَجْنَا مِنْهَا حَبًّا فَمِنْهُ يَأْكُلُونَ33

বাংলা অনুবাদ
৩৩ আর মৃত যমীন তাদের জন্য একটি নিদর্শন, আমি তাকে জীবিত করেছি এবং তা থেকে শস্যদানা উৎপন্ন করেছি। অতঃপর তা থেকেই তারা খায়।

وَجَعَلْنَا فِيهَا جَنَّاتٍ مِنْ نَخِيلٍ وَأَعْنَابٍ وَفَجَّرْنَا فِيهَا مِنَ الْعُيُونِ34

বাংলা অনুবাদ
৩৪ আর আমি তাতে খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান তৈরী করেছি এবং তাতে কিছু ঝর্নাধারা প্রবাহিত করি।

لِيَأْكُلُوا مِنْ ثَمَرِهِ وَمَا عَمِلَتْهُ أَيْدِيهِمْ أَفَلَا يَشْكُرُونَ35

বাংলা অনুবাদ
৩৫ যাতে তারা তার ফল খেতে পারে, অথচ তাদের হাত তা বানায়নি। তবুও কি তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে না?

سُبْحَانَ الَّذِي خَلَقَ الْأَزْوَاجَ كُلَّهَا مِمَّا تُنْبِتُ الْأَرْضُ وَمِنْ أَنْفُسِهِمْ وَمِمَّا لَا يَعْلَمُونَ36

বাংলা অনুবাদ
৩৬ পবিত্র ও মহান সে সত্তা যিনি সকল জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছেন, যমীন যা উৎপন্ন করেছে তা থেকে, মানুষের নিজদের মধ্য থেকে এবং সে সব কিছু থেকেও যা তারা জানে না ।

وَآيَةٌ لَهُمُ اللَّيْلُ نَسْلَخُ مِنْهُ النَّهَارَ فَإِذَا هُمْ مُظْلِمُونَ37

বাংলা অনুবাদ
৩৭ আর রাত তাদের জন্য একটি নিদর্শন; আমি তা থেকে দিনকে সরিয়ে নেই, ফলে তখনই তারা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়।

وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَهَا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ 38

বাংলা অনুবাদ
৩৮ আর সূর্য ভ্রমণ করে তার নির্দিষ্ট পথে, এটা মহাপরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ (আল্লাহ)-র নির্ধারণ।

وَالْقَمَرَ قَدَّرْنَاهُ مَنَازِلَ حَتَّى عَادَ كَالْعُرْجُونِ الْقَدِيمِ39

বাংলা অনুবাদ
৩৯ আর চাঁদের জন্য আমি নির্ধারণ করেছি মানযিলসমূহ, অবশেষে সেটি খেজুরের শুষ্ক পুরাতন শাখার মত হয়ে যায়।

لَا الشَّمْسُ يَنْبَغِي لَهَا أَنْ تُدْرِكَ الْقَمَرَ وَلَا اللَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ وَكُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ40

বাংলা অনুবাদ
৪০ সূর্যের জন্য সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া, আর রাতের জন্য সম্ভব নয় দিনকে অতিক্রম করা, আর প্রত্যেকেই কক্ষ পথে ভেসে বেড়ায়।

وَآيَةٌ لَهُمْ أَنَّا حَمَلْنَا ذُرِّيَّتَهُمْ فِي الْفُلْكِ الْمَشْحُونِ41

বাংলা অনুবাদ
৪১ আর তাদের জন্য একটি নিদর্শন হল, অবশ্যই আমি তাদের বংশধরদেরকে ভরা নৌকায় আরোহণ করিয়েছিলাম।

وَخَلَقْنَا لَهُمْ مِنْ مِثْلِهِ مَا يَرْكَبُونَ42

বাংলা অনুবাদ
৪২ আর তাদের জন্য তার অনুরূপ (যানবাহন) সৃষ্টি করেছি, যাতে তারা আরোহণ করে।

وَإِنْ نَشَأْ نُغْرِقْهُمْ فَلَا صَرِيخَ لَهُمْ وَلَا هُمْ يُنْقَذُونَ43

বাংলা অনুবাদ
৪৩ আর যদি আমি চাই তাদেরকে নিমজ্জিত করে দেই, তখন তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী থাকে না এবং তাদেরকে উদ্ধারও করা হয় না।

إِلَّا رَحْمَةً مِنَّا وَمَتَاعًا إِلَى حِينٍ44

বাংলা অনুবাদ
৪৪ যদি না আমার পক্ষ থেকে রহমত হয় এবং কিছু সময়ের জন্য উপভোগের সুযোগ দেয়া হয়।

وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اتَّقُوا مَا بَيْنَ أَيْدِيكُمْ وَمَا خَلْفَكُمْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ 45

বাংলা অনুবাদ
৪৫ আর যখন তাদেরকে বলা হয়, যা তোমাদের সামনে আছে এবং যা তোমাদের পিছনে আছে সে বিষয়ে সতর্ক হও, যাতে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা যায়।

وَمَا تَأْتِيهِمْ مِنْ آيَةٍ مِنْ آيَاتِ رَبِّهِمْ إِلَّا كَانُوا عَنْهَا مُعْرِضِينَ46

বাংলা অনুবাদ
৪৬ আর তাদের রবের নিদর্শনসমূহ থেকে তাদের কাছে কোন নিদর্শন আসলেই তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ أَنْفِقُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ قَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلَّذِينَ آمَنُوا أَنُطْعِمُ مَنْ لَوْ يَشَاءُ اللَّهُ أَطْعَمَهُ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا فِي ضَلَالٍ مُبِينٍ47

বাংলা অনুবাদ
৪৭ আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ তোমাদেরকে যে রিয্ক দিয়েছেন তা থেকে তোমরা ব্যয় কর’, তখন কাফিররা মুমিনদেরকে বলে, ‘আমরা কি তাকে খাদ্য দান করব, আল্লাহ চাইলে যাকে খাদ্য দান করতেন? তোমরা তো স্পষ্ট পথভ্রষ্টতায় রয়েছ’।

وَيَقُولُونَ مَتَى هَذَا الْوَعْدُ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ48

বাংলা অনুবাদ
৪৮ আর তারা বলে, ‘এ ওয়াদা কখন বাস্তবায়িত হবে’? (তা বল) ‘যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।

مَا يَنْظُرُونَ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً تَأْخُذُهُمْ وَهُمْ يَخِصِّمُونَ49

বাংলা অনুবাদ
৪৯ তারা তো কেবল এক বিকট আওয়াজের অপেক্ষা করছে যা তাদেরকে বাক-বিতণ্ডায় লিপ্ত অবস্থায় পাকড়াও করবে।

فَلَا يَسْتَطِيعُونَ تَوْصِيَةً وَلَا إِلَى أَهْلِهِمْ يَرْجِعُونَ 50

বাংলা অনুবাদ
৫০ সুতরাং না পারবে তারা ওসিয়াত করতে এবং না পারবে তাদের পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে যেতে।

وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَإِذَا هُمْ مِنَ الْأَجْدَاثِ إِلَى رَبِّهِمْ يَنْسِلُونَ51

বাংলা অনুবাদ
৫১ আর শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা কবর থেকে তাদের রবের দিকে ছুটে আসবে।

قَالُوا يَا وَيْلَنَا مَنْ بَعَثَنَا مِنْ مَرْقَدِنَا هَذَا مَا وَعَدَ الرَّحْمَنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُونَ52

বাংলা অনুবাদ
৫২ তারা বলবে, ‘হায় আমাদের দুর্ভোগ! কে আমাদেরকে আমাদের নিদ্রাস্থল থেকে উঠালো’? (তাদেরকে বলা হবে) ‘এটা তো তা যার ওয়াদা পরম করুনাময় করেছিলেন এবং রাসূলগণ সত্য বলেছিলেন’।

إِنْ كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً فَإِذَا هُمْ جَمِيعٌ لَدَيْنَا مُحْضَرُونَ53

বাংলা অনুবাদ
৫৩ তা ছিল শুধুই একটি বিকট আওয়াজ, ফলে তৎক্ষণাৎ তাদের সকলকে আমার সামনে উপস্থিত করা হবে।

فَالْيَوْمَ لَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَلَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ54

বাংলা অনুবাদ
৫৪ সুতরাং আজ কাউকেই কোন যুলম করা হবে না এবং তোমরা যা আমল করছিলে শুধু তারই প্রতিদান তোমাদের দেয়া হবে।

إِنَّ أَصْحَابَ الْجَنَّةِ الْيَوْمَ فِي شُغُلٍ فَاكِهُونَ55

বাংলা অনুবাদ
৫৫ নিশ্চয় জান্নাতবাসীরা আজ আনন্দে মশগুল থাকবে।

هُمْ وَأَزْوَاجُهُمْ فِي ظِلَالٍ عَلَى الْأَرَائِكِ مُتَّكِئُونَ56

বাংলা অনুবাদ
৫৬ তারা ও তাদের স্ত্রীরা ছায়ার মধ্যে সুসজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে উপবিষ্ট থাকবে।

لَهُمْ فِيهَا فَاكِهَةٌ وَلَهُمْ مَا يَدَّعُونَ 57

বাংলা অনুবাদ
৫৭ সেখানে তাদের জন্য থাকবে ফল-ফলাদি এবং থাকবে তারা যা চাইবে তাও।

سَلَامٌ قَوْلًا مِنْ رَبٍّ رَحِيمٍ58

বাংলা অনুবাদ
৫৮ অসীম দয়ালু রবের পক্ষ থেকে বলা হবে, ‘সালাম’।

وَامْتَازُوا الْيَوْمَ أَيُّهَا الْمُجْرِمُونَ59

বাংলা অনুবাদ
৫৯ আর [বলা হবে] ‘হে অপরাধীরা, আজ তোমরা পৃথক হয়ে যাও’।

أَلَمْ أَعْهَدْ إِلَيْكُمْ يَا بَنِي آدَمَ أَنْ لَا تَعْبُدُوا الشَّيْطَانَ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ60

বাংলা অনুবাদ

৬০ হে বনী আদম, আমি কি তোমাদেরকে এ মর্মে নির্দেশ দেইনি যে, ‘তোমরা শয়তানের উপাসনা করো না। নিঃসন্দেহে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্র“’?

وَأَنِ اعْبُدُونِي هَذَا صِرَاطٌ مُسْتَقِيمٌ61

বাংলা অনুবাদ
৬১ আর আমারই ইবাদাত কর। এটিই সরল পথ।

وَلَقَدْ أَضَلَّ مِنْكُمْ جِبِلًّا كَثِيرًا أَفَلَمْ تَكُونُوا تَعْقِلُونَ62

বাংলা অনুবাদ
৬২ আর অবশ্যই শয়তান তোমাদের বহু দলকে পথভ্রষ্ট করেছে। তবুও কি তোমরা অনুধাবন করনি?

هَذِهِ جَهَنَّمُ الَّتِي كُنْتُمْ تُوعَدُونَ63

বাংলা অনুবাদ
৬৩ এটি সেই জাহান্নাম যার সম্পর্কে তোমরা ওয়াদাপ্রাপ্ত হয়েছিলে।

اصْلَوْهَا الْيَوْمَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُونَ64

বাংলা অনুবাদ
৬৪ তোমরা যে কুফরী করতে সে কারণে আজ তোমরা এতে প্রবেশ কর।

الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَى أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ65

বাংলা অনুবাদ
৬৫ আজ আমি তাদের মুখে মোহর মেরে দেব এবং তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে ও তাদের পা সে সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবে যা তারা অর্জন করত।

وَلَوْ نَشَاءُ لَطَمَسْنَا عَلَى أَعْيُنِهِمْ فَاسْتَبَقُوا الصِّرَاطَ فَأَنَّى يُبْصِرُونَ66

বাংলা অনুবাদ
৬৬ আর যদি আমি চাইতাম তবে তাদের চোখসমূহ অন্ধ করে দিতাম। তখন এরা পথের অন্বেষণে দৌড়ালে কী করে দেখতে পেত?

وَلَوْ نَشَاءُ لَمَسَخْنَاهُمْ عَلَى مَكَانَتِهِمْ فَمَا اسْتَطَاعُوا مُضِيًّا وَلَا يَرْجِعُونَ67

বাংলা অনুবাদ
৬৭ আর আমি যদি চাইতাম তবে তাদের স্ব স্ব স্থানে তাদেরকে বিকৃত করে দিতাম। ফলে তারা সামনেও এগিয়ে যেতে পারত না এবং পিছনেও ফিরে আসতে পারত না।

وَمَنْ نُعَمِّرْهُ نُنَكِّسْهُ فِي الْخَلْقِ أَفَلَا يَعْقِلُونَ68

বাংলা অনুবাদ
৬৮ আর আমি যাকে দীর্ঘ জীবন দান করি, সৃষ্টি-অবয়বে আমি তার পরিবর্তন ঘটাই। তবুও কি তারা বুঝবে না

وَمَا عَلَّمْنَاهُ الشِّعْرَ وَمَا يَنْبَغِي لَهُ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ وَقُرْآنٌ مُبِينٌ69

বাংলা অনুবাদ
৬৯ আমি রাসূলকে কাব্য শিখাইনি এবং এটি তার জন্য শোভনীয়ও নয়। এ তো কেবল এক উপদেশ ও স্পষ্ট কুরআন মাত্র।

لِيُنْذِرَ مَنْ كَانَ حَيًّا وَيَحِقَّ الْقَوْلُ عَلَى الْكَافِرِينَ 70

বাংলা অনুবাদ
৭০ যাতে তা সতর্ক করতে পারে ঐ ব্যক্তিকে যে জীবিত এবং যাতে কাফিরদের বিরুদ্ধে অভিযোগবাণী প্রমাণিত হয়।

أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّا خَلَقْنَا لَهُمْ مِمَّا عَمِلَتْ أَيْدِينَا أَنْعَامًا فَهُمْ لَهَا مَالِكُونَ71

বাংলা অনুবাদ
৭১ তারা কি দেখেনি, আমার হাতের তৈরী বস্তুসমূহের মধ্যে আমি তাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তারা হল এগুলোর মালিক।

وَذَلَّلْنَاهَا لَهُمْ فَمِنْهَا رَكُوبُهُمْ وَمِنْهَا يَأْكُلُونَ72

বাংলা অনুবাদ
৭২ আর আমি এগুলোকে তাদের বশীভূত করে দিয়েছি। ফলে এদের কতক তাদের বাহন এবং কতক তারা ভক্ষণ করে।

وَلَهُمْ فِيهَا مَنَافِعُ وَمَشَارِبُ أَفَلَا يَشْكُرُونَ73

বাংলা অনুবাদ
৭৩ আর তাদের জন্য এগুলোতে রয়েছে আরও বহু উপকারিতা ও পানীয় উপাদান। তবুও কি তারা শোকর আদায় করবে না?

وَاتَّخَذُوا مِنْ دُونِ اللَّهِ آلِهَةً لَعَلَّهُمْ يُنْصَرُونَ74

বাংলা অনুবাদ
৭৪ অথচ তারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্য সব ইলাহ গ্রহণ করেছে, এই প্রত্যাশায় যে, তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।

لَا يَسْتَطِيعُونَ نَصْرَهُمْ وَهُمْ لَهُمْ جُنْدٌ مُحْضَرُونَ75

বাংলা অনুবাদ
৭৫ এরা তাদের কোন সাহায্য করতে সক্ষম হবে না, বরং এগুলোকে তাদের বিরুদ্ধে বাহিনীরূপে হাযির করা হবে।

فَلَا يَحْزُنْكَ قَوْلُهُمْ إِنَّا نَعْلَمُ مَا يُسِرُّونَ وَمَا يُعْلِنُونَ 76

বাংলা অনুবাদ
৭৬ সুতরাং তাদের কথা তোমাকে যেন চিন্তিত না করে, নিশ্চয় আমি জানি তারা যা গোপন করে এবং যা প্রকাশ করে।

أَوَلَمْ يَرَ الْإِنْسَانُ أَنَّا خَلَقْنَاهُ مِنْ نُطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيمٌ مُبِينٌ77

বাংলা অনুবাদ

৭৭ মানুষ কি দেখেনি যে, আমি তাকে সৃষ্টি করেছি শুক্রবিন্দু থেকে? অথচ সে (বনে যায়) একজন প্রকাশ্য কুটতর্ককারী।

وَضَرَبَ لَنَا مَثَلًا وَنَسِيَ خَلْقَهُ قَالَ مَنْ يُحْيِي الْعِظَامَ وَهِيَ رَمِيمٌ78

বাংলা অনুবাদ
৭৮ আর সে আমার উদ্দেশ্যে উপমা পেশ করে, অথচ সে তার নিজের সৃষ্টি ভুলে যায়। সে বলে, ‘হাড়গুলো জরাজীর্ণ হওয়া অবস্থায় কে সেগুলো জীবিত করবে’?

قُلْ يُحْيِيهَا الَّذِي أَنْشَأَهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ وَهُوَ بِكُلِّ خَلْقٍ عَلِيمٌ79

বাংলা অনুবাদ
৭৯ বল, ‘যিনি প্রথমবার এগুলোকে সৃষ্টি করেছেন তিনিই সেগুলো পুনরায় জীবিত করবেন। আর তিনি সকল সৃষ্টি সম্পর্কেই সর্বজ্ঞাতা।

الَّذِي جَعَلَ لَكُمْ مِنَ الشَّجَرِ الْأَخْضَرِ نَارًا فَإِذَا أَنْتُمْ مِنْهُ تُوقِدُونَ80

বাংলা অনুবাদ
৮০ যিনি সবুজ বৃক্ষ থেকে তোমাদের জন্য আগুন তৈরী করেছেন। ফলে তা থেকে তোমরা আগুন জ্বালাও।

أَوَلَيْسَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِقَادِرٍ عَلَى أَنْ يَخْلُقَ مِثْلَهُمْ بَلَى وَهُوَ الْخَلَّاقُ الْعَلِيمُ 81

বাংলা অনুবাদ
৮১ যিনি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন তিনি কি তাদের অনুরূপ সৃষ্টি করতে সক্ষম নন? হ্যাঁ, তিনিই মহাস্রষ্টা, সর্বজ্ঞানী।

إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَنْ يَقُولَ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ82

বাংলা অনুবাদ
৮২ তাঁর ব্যাপার শুধু এই যে, কোন কিছুকে তিনি যদি ‘হও’ বলতে চান, তখনই তা হয়ে যায়।
فَسُبْحَانَ الَّذِي بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ 83

বাংলা অনুবাদ
৮৩ অতএব পবিত্র মহান তিনি, যার হাতে রয়েছে সকল কিছুর রাজত্ব এবং তাঁরই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।

সূরা ইয়াসিনের উপকারিতা

পবিত্র কোরআনের ১১৪টি সূরার মধ্যে একটি সূরা ইয়াসিন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ। হিজরতের অনেক আগে এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুওয়াতের শুরুতে সূরা ইয়াসিন মক্কায় অবতীর্ণ হয়। এতে পাঁচটি রুকূ ও ৮৩টি আয়াত রয়েছে। মহান রাব্বুল আলামিন মহাবিশ্বের সূচনার প্রায় 2,000 বছর আগে ফেরেশতাদের কাছে এই কুরআন তেলাওয়াত করেছিলেন। তারা সূরা ইয়াসিনের গুণাবলী, ঘ্রাণ, অর্থ এবং গুণাবলী সম্পর্কে শুনে মাওলার পবিত্র পায়ের কাছে নতজানু হয়। সূরা ইয়াসিন শুনে পবিত্র কোরআনের মহিমা সম্পর্কে তাদের যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।

এটিকে কুরআনের রূহ বা সূরা ইয়াসিন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই সূরাটি গুণাবলীর দিক থেকে উল্লেখযোগ্য, তাই মানুষের অস্তিত্ব সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনায় এর একটি নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে। ইমাম গাজ্জালী। তাঁর মতে, সূরা ইয়াসিন কুরআনের হৃদয় হিসাবে পরিচিত কারণ এটি অলংকৃত বিবরণে কিয়ামত এবং হাশর-নাসরের পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা প্রদান করে। মানুষের যাবতীয় কাজকর্ম ও আচার-আচরণের বিশুদ্ধতা আখেরাতের বিশ্বাসের ইমান নীতির উপর ভিত্তি করে।

সূরা ইয়াসিনের উপকারিতা, তাৎপর্য এবং মহিমাকে অতিরিক্ত মূল্যায়ন করা অসম্ভব। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর অনেক হাদিস আমাদের এই সূরার মহিমা সম্পর্কে অবহিত করে। এর কয়েকটি উপকারিতা নিম্নরূপ:

সূরা ইয়াসিন, কুরআনের হৃদয়: তাফসিরে, হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বায়যাভী শরীফের একটি উদ্ধৃতি সহ একটি হাদিস জালালাইন শরীফের 368 পৃষ্ঠার মার্জিনে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।

প্রত্যেকের এবং সবকিছুর একটি “কালব” আছে এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মতে কুরআনের “কলব” হল “সূরা ইয়াসিন শরীফ”।

হজরত আনাস (রা.) এর মতে, প্রতিটি বস্তুরই একটি হৃদয় রয়েছে, নবী (সা.) মন্তব্য করেছেন। সূরা ইয়াসিন কুরআনের কেন্দ্রবিন্দু। যে ব্যক্তি মাত্র একবার সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা দশবার কুরআন খতম করার পুরস্কার দেবেন। তিরমিযীতে ২৮৯১।

সূরা ইয়াসিনের অর্থ পাপ-ক্ষমা। প্রতিদিনের ত্রুটিগুলি মানুষের একটি অংশ। ভুল করা গুনাহের কাজ। যারা পাপ করে তারা জাহান্নামে পুড়বে। জাহান্নাম থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হল তাওবা বা ভালো কাজ। কেউ যদি বারবার সূরা ইয়াসিন পাঠ করে, তাহলে আল্লাহ তায়ালা খুশি হবেন এবং তাদের অতীত জীবনের সমস্ত অপকর্ম ক্ষমা করে দেবেন।

হজরত মাকাল ইবনে ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘোষণা করেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে, আল্লাহ তার পূর্বের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেবেন। (বায়হাকী: 2178; সুনানে আবু দাউদ: 3121)।

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ঘোষণা করেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রাতে সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে, আল্লাহ সেই রাতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেবেন।” (3460 সুনান দারেমী)।

ইয়াসিন সূরা একটি প্রয়োজন পূরণের উপায় (হাজত) শুধুমাত্র ব্যক্তিরা, তাদের এলাকার উপর নির্ভর করে, শুধুমাত্র তারাই দারিদ্র্য ভোগ করে। কঠোর পরিশ্রম বা অর্থ উপার্জন দারিদ্র্য দূর করতে সক্ষম হবে না। যারা প্রচুর পরিশ্রম করে বা অর্থ উপার্জন করে তাদের ঈশ্বরের দ্বারা আরও অনুগ্রহ দেওয়া হয়। সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াত আল্লাহর রহমত ও উপকার নিয়ে আসে। সূরা ইয়াসিন পাঠ করলে মনের আশা-আকাঙ্খা মিটে যায়।

হজরত আতা ইবনে আবি রাবাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি শুনেছি যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সারাদিন সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে, তার সমস্ত হজ পূর্ণ হবে।” 3461 সুনান দারেমী।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের রা.-এর মতে, কোনো ব্যক্তি যদি কষ্টের সময় সূরা ইয়াসিন পাঠ করে, তাহলে তার দারিদ্র্য দূর হবে এবং বিশ্ব শান্তি ও পুষ্টি লাভ করবে। (মাজহারী)

ইয়াহইয়া ইবনে কাসিরের মতে, যে ব্যক্তি সকালে সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত আনন্দিত হবে। যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় সালাত আদায় করবে সে সকাল পর্যন্ত প্রশান্তি অনুভব করবে (মাজহারী)।

মৃতদের ব্যথা কমানোর জন্য সূরা ইয়াসিন পদ্ধতিগুলি যদি একজন মুসলিম সাকরাতুল মাউতের সময় সূরা ইয়াসিন শরীফ পাঠ করে, মালাকুল মাউত বেহেশত দখল করবে না যতক্ষণ না রেদওয়ান নামক একজন ফেরেশতা স্বর্গের সুসংবাদ ঘোষণা করেন। ব্যক্তি স্বর্গে থাকবে “রাইয়ান” নামে পরিচিত যদি তাদের আত্মার আকর্ষণ থাকে। (৩৬০ পৃষ্ঠা; হাসিয়াহ জালালাইনশরীফ) হজরত আবু যার (রা:) এর মতে, মৃত ব্যক্তির কাছে সূরা ইয়াসিন পাঠ করলে তার কষ্ট কমে যাবে। (মাজহারী)

হযরত মাকিল ইবনে ইয়াসার (রহ.) এর বর্ণনা। আপনার নিরক্ষর লোকেদের কাছে এটি পাঠ করুন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মতে তাঁকে শান্তি দান করুন। ইয়াসিন সূরা তা। – (মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)

ইমাম আহমাদ (রহঃ) এর মতে, সূরা ইয়াসিন যদি ভুলে যাওয়া ব্যক্তিকে পাঠ করা হয়, তবে আল্লাহ তার ব্যথা কমিয়ে দেবেন। (তাফসীর ইবনে কাসিরের 3 খণ্ডের পৃষ্ঠা 154) এই জীবনে এবং পরের জীবনে আল্লাহর সাহায্য ছাড়া মুক্তি পাওয়া অসম্ভব। বিপদ এবং জাহান্নামের শিখা থেকে রক্ষার সর্বোত্তম উপায় হল কোরআন তেলাওয়াত। সকল প্রকার পার্থিব সমস্যা দূর করতে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের জন্য আল্লাহ তায়ালা সবাইকে সূরা ইয়াসিন বারবার পাঠ করার প্রতিদান দিন।

PDF Information :



  • PDF Name:   সূরা-ইয়াসিন-বাংলা-উচ্চারণ-সহ
    File Size :   ERROR
    PDF View :   0 Total
    Downloads :  Free Downloads
     Details :  Free Download সূরা-ইয়াসিন-বাংলা-উচ্চারণ-সহ to Personalize Your Phone.
     File Info:  This Page  PDF Free Download, View, Read Online And Download / Print This File File 
Love0

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *